বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডসকে নাস্তানাবুদ করে জয়।


হোবার্টঃ নেদারল্যান্ডস ১৪৪ রানের তাড়া করতে নেমে প্রায় পাওয়ারপ্লে ওভারে নাস্তানাবুদ হয়ে যায়, যেখানে নেদারল্যান্ডস আধা প্লেয়ার প্যাভিলিয়ন ফিরে যায়। আজ বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের খুশির কোনো ঠিকানা ছিলো না কারণ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফর্ম্যান্স নিতান্ত খারাপ মধ্যে চলছিল। এটি বিশ্বকাপের মুল পর্বে ১৫ বছরের পর জয় ছিলো। জয়ের মুখ্য ভূমিকায় তাস্কিন আহমেদ। 

বাংলাদেশ একাদশঃ সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, শাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, ইয়াসির আলি, নুরুল হাসান (উইকেট-রক্ষক), মোসাদ্দেক হোসেন, তাস্কিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও হাসান মাহমুদ।


নেদারল্যান্ডস একাদশঃ ম্যাক্স ও’দাউদ, বিক্রমজিৎ সিং, বাস ডি’লিড, টম কুপার, কলিন অ্যাকারম্যান, স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক ও উইকেট-রক্ষক), টিম প্রিঙ্গল, লগান ভ্যান বিক, শারিজ আহমেদ, ফ্রেড ক্লাসেন ও পল ভ্যান মিকেরেন।

শুরুতে যেন মনে হয়েছিলো ডাচ ব্রিগেডের কাছে সাকিব আল হাসান ব্রিগেডে অর্থাৎ টাইগার্সদের কাছে ডাচ (নেদারল্যান্ডস) ব্রিগেডের দাঁড়ানো সম্ভব নয়। দুই ওপেনার অর্থাৎ সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত ৫ ওভারে ৪৩ রান করে বসে। দুই ওপেনার খুবই ভালো খেলছিল। কিন্তু হঠাৎ সৌম্য সরকার ৫.১ ওভারে ভ্যান মিকেরেন বলে বাস ডি’লিড হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন। ঠিক একইভাবে নাজমুল হোসেন শান্ত ৬.১ ওভারে টিম প্রিঙ্গল বলে লগান ভ্যান বিক হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন। পরে লিটন দাস ও আউট হয়ে বসেন। লিটন দাস আউট হওয়ার পর টাইগার্সদের একমাত্র আশা ভরসা অর্থাৎ বাংলার জান ও প্রাণ শাকিব আল হাসান ক্রিজে আসেন। আশা করা হয়েছিল আজ শাকিব আল হাসান কিছু করে দেখাবে কিন্তু, দুর্দান্ত একটি শর্ট শারিজ আহমেদ বলে বাস ডি’লিড হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন। বাংলার অধিনায়ক শাকিব আল হাসান যখন আউট হয়ে যান, যেন মনে হলো আকাশ ধসে পড়ে যায়। বাংলাদেশের একাদশে হুলুস্থূল ছড়িয়ে যায়। তখন বাংলাদেশের ৯.১ ওভারে ৬৩ রান। পরে আফিফ হোসেন (৩৮) ও মোসাদ্দেক হোসেন (২০) জন্য বাংলাদেশের রানা ১৪৪-৮ (২০.০) হয়ে দাঁড়ায়।

বাংলাদেশের রানঃ ১৪৪/ ৮ (২০.০) 
নাজমুল হোসেন শান্ত ২৫/২০ রান, ১২৫ স্ট্রাইক রেট। সৌম্য সরকার ১৪/১৪ রান, ১০০ স্ট্রাইক রেট। লিটন দাস ৯/১১ রান, ৮১ স্ট্রাইক রেট। শাকিব আল হাসান ৭/৯ রান, ৭৭.৭৮ স্ট্রাইক রেট। আফিফ হোসেন ৩৮/২৭ রান, ১৪০.৭৪ স্ট্রাইক রেট। ইয়াসির আলি ৩/৫ রান, ৬০ স্ট্রাইক রেট।  নুরুল হাসান ১৩/১৮ রান, ৭২.২২ স্ট্রাইক রেট। মোসাদ্দেক হোসেন ২০/১২ রান, ১৬৬.৬৭ স্ট্রাইক রেট। তাস্কিন আহমেদ ০/১ রান, ০ স্ট্রাইক রেট। হাসান মাহমুদ ০/৩ রান, ০ স্ট্রাইক রেট।

নেদারল্যান্ডস বোলিংঃ ফ্রেড ক্লাসেন ৪/৩৩ রান, ১টি উইকেট। কলিন অ্যাকারম্যান ১/৪ রান, ০ (শূন্য) উইকেট। ভ্যান মিকেরেন ৪/২১ রান, ২টি উইকেট। বাস ডি’লিড ৩/২৯ রান, ২টি উইকেট। টিম প্রিঙ্গল ২/১০ রান, ১টি উইকেট। শারিজ আহমেদ ৩/২৭ রান, ১টি উইকেট। লগান ভ্যান বিক ৩/১২ রান, ১টি উইকেট।

নেদারল্যান্ডস বিগ্ৰেড রান তাড়াঃ দ্বিতীয় ইনিংসে ডাচ বিগ্ৰেড রান তাড়া করতে নামেন। রান তাড়া করতে নেমে প্রথম বলে ওপেনার বিক্রমজিৎ সিং তাস্কিন আহমেদ বলে ইয়াসির আলি হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন। দ্রুত বিক্রমজিৎ সিংকে প্যাভিলিয়ন রহনা হতে হয়, তখন তিন নং বাস ডি’লিড ব্যাট করতে আসেন। তিনি ও তাস্কিন আহমেদের দ্বিতীয় বলে নুরুল হাসান দ্বারা কট বিহাইন্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে। ম্যাক্স ও’দাউদ ও কলিন অ্যাকারম্যান কোনো রকম গেমকে চালাতে থাকে। কিন্তু পাওয়াপ্লে তৃতীয় ওভার শাকিব আল হাসানের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে আফিফ হোসেন থ্রো বলে ম্যাক্স ও’দাউদ ফালতু একটি রান আউট হয়ে বসেন। পরে পাঁচ নং টম কুপার আসেন। শাকিব আল হাসানের চতুর্থ বলে টম কুপার নাজমুল হোসেন শান্ত থ্রো বলে নুরুল হাসান দ্বারা নিজেকে রান আউট করে বসেন। পাওয়ারপ্লে ওভারে নেদারল্যান্ডস প্রায় নাস্তানাবুদ হয়ে যায়। পরে আবার কোনো রকম কলিন অ্যাকারম্যান ও স্কট এডওয়ার্ডস ম্যাচ চালাতে থাকে। ১১.৩ ওভারে শাকিব আল হাসানের বলে স্কট এডওয়ার্ডস হাসান মাহমুদকে ক্যাচ দিয়ে বসেন।এডওয়ার্ডস আউট হওয়ার পর যেন উইকেট পওন উপরে হয়ে উঠেছিল। টিম প্রিঙ্গল হাসান মাহমুদ বলে বোল্ড আউট। লগান ভ্যান বিক, হাসান মাহমুদ বলে তাস্কিন আহমেদ ক্যাচ আউট। শারিজ আহমেদ, তাস্কিন আহমেদ বলে হাসান মাহমুদকে ক্যাচ দিয়ে বসেন। কলিন অ্যাকারম্যান অনেক সংঘর্ষ করে যান। কিন্তু অবশেষে তিনি ও তাস্কিন আহমেদ বলে মোসাদ্দেক হোসেন ক্যাচ দিয়ে বসেন। পরে পল ভ্যান মিকেরেন, সৌম্য সরকার বলে লিটন দাসের হাত ক্যাচ দিয়ে বসেন। এইভাবে নেদারল্যান্ডস অল-আউট হয়ে যায়।

নেদারল্যান্ডস রানঃ ১৪৪/ ৮ (২০.০) 

ম্যাক্স ও’দাউদ ৮/৮ রান, ১০০ স্ট্রাইক রেট। বিক্রমজিৎ সিং ০/১ রান, ০ (শূন্য) স্ট্রাইক রেট। বাস ডি’লিড ০/১ রান, ০ (শূন্য) স্ট্রাইক রেট। টম কুপার ০/০ রান, ০ (শূন্য) স্ট্রাইক রেট। কলিন অ্যাকারম্যান ৬২/৪৮ রান, ১২৯.১৭ স্ট্রাইক রেট। স্কট এডওয়ার্ডস ১৬/২৪ রান, ৬৬.৬৭ স্ট্রাইক রেট। টিম প্রিঙ্গল ১/৬ রান, ১৬.৬৭ স্ট্রাইক রেট। লগান ভ্যান বিক ২/৫ রান, ৪০ স্ট্রাইক রেট। শারিজ আহমেদ ৯/৮ রান, ১১২.২৫ স্ট্রাইক রেট। ফ্রেড ক্লাসেন ৭/৬ রান, ১১৬.৬৭ স্ট্রাইক রেট। পল ভ্যান মিকেরেন ২৪/১৪ রান, ১৭১.৪৩ স্ট্রাইক রেট।

বাংলাদেশ বোলিংঃ 
তাস্কিন আহমেদ ৪/২৫ রান, ৪টি উইকেট। হাসান মাহমুদ ৪/১৫ রান, ২টি উইকেট। শাকিব আল হাসান ৪/৩২ রান, ১টি উইকেট। মুস্তাফিজুর রহমান ৪/২০ রান, ০ (শূন্য) উইকেট। সৌম্য সরকার ৩/২৯ রান, ১টি উইকেট। মোসাদ্দেক হোসেন ১/১৪ রান, ০ (শূন্য) আউট।